৫ টি সেরা কমিউটার বাইক!

সাধারণত আমাদের প্রতিদিনের চলাচলের জন্য যে বাইকগুলো ডিজাইন করা হয় সেগুলোই হল কমিউটার বাইক। এই বাইকগুলো শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সব ধরনের রাস্তায় চলার জন্য তৈরী করা হয়। প্রতিদিনের ব্যবহার, জ্বালানির হার, মাইলেজ, ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি খেয়াল রেখে মূলত কমিউটার মোটরসাইকেল বানানো হয়। বাইকগুলো বেশ আরামপ্রদ হয়ে থাকে। ছোট থেকে মাঝারি আকারের ভ্রমণের জন্য কমিউটার মোটরসাইকেলগুলো বেশ চাহিদার তুঙ্গে অবস্থান করছে। আজকের ব্লগটি আমরা বাংলাদেশে বিখ্যাত ৫টি কমিউটার মোটরসাইকেল সম্পর্কে আলোচনা করবো।

সূচীপত্র

বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত কমিউটার বাইক কোনগুলো?

১। Honda CB Shine SP

Honda CB Shine SP একটি উচ্চ মাইলেজ এবং গতিময় রাইডিং এক্সপেরিয়েন্সের সমন্বয়ে গঠিত জনপ্রিয় কমিউটার মোটরসাইকেল। এটির ডিজাইন সহজে আপনার মনোযোগ কেড়ে নিবে। বড় ডাইমেনশনের কারণে বাইকটি একটি আকর্ষণীয় লুক প্রদান করে। এই বাইকের ইঞ্জিনের ডিসপ্লেসমেন্ট ১২৫ সিসি, যা একটি মাধ্যমিক সাইজের ইঞ্জিন হিসেবে গণ্য হয়। ইঞ্জিনের বৈশিষ্ট্য এয়ার কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, এবং স্পার্ক ইগনিশন দ্বারা পরিচালিত। এই ইঞ্জিন একটি মোটরসাইকেলের জন্য যথেষ্ট পাওয়ার এবং টর্ক প্রদান করে, যা গতি এবং পারফরম্যান্স দৃষ্টিতে উত্তম হিসেবে মনোনিবেশ করা যেতে পারে। এটি হাইওয়েতে ৬০ কিমি/লি এবং সিটি রাইডিংয়ে ৫০ কিমি/লি মাইলেজ দিতে পারে। 

honda cb shine sp

এই বাইকের গতি এবং ইঞ্জিন পাওয়ার বেশি হওয়ার কারণে এটি বাজারে অন্যান্য জ্বালানি সাশ্রয়ী বাইকগুলির মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এছাড়াও, এই বাইকের মাইলেজ প্রায় ৫০ কিলোমিটার প্রতি লিটার, যা কমিউটিং এবং দৈনন্দিন ব্যবহারে বেশ উপযুক্ত। সুতরাং, Honda CB Shine SP একটি প্রায়শই অনুসরণীয় বাইক যা মাইলেজ এবং পারফরম্যান্সের সমন্বয়ে মানুষদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়।এই বাইকটির দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং উচ্চতা যথাক্রমে ২০০৭ মিমি, ৭৬২ মিমি এবং ১০৮৫ মিমি।এটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এবং হুইলবেস যথাক্রমে ১৬০ মিমি এবং ১২৬৬ মিমি। সহজে বললে ইঞ্জিন পাওয়ার, মাইলেজ, স্পিড, স্থায়িত্ব ইত্যাদির জন্য বাইকটি বেশ জনপ্রিয়।

২। Suzuki Hayate

সুজুকি বাইক বিশেষভাবে কমিউটার বাইকের একটি প্রধান সারির নাম। তারা বিভিন্ন সিসিতে বিভিন্ন মডেলের বাইক উৎপাদন করে এবং সাধারণত তাদের মোটরসাইকেলগুলি মাইলেজ, স্টাইল এবং সহজ ব্যবহারের জন্য সমাধিক পরিচিত। তাদের ১১০ সিসিতে বাইকের ক্ষেত্রে, সুজুকি হায়াতে স্পেশাল এডিশন বিশেষভাবে মনোনিবেশ উদ্বোধন করেছে। এই মডেলের বাইক প্রধানত দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য জনপ্রিয় । এই বাইকটি টপ স্পিড ৮০ কিমি / ঘণ্টা এবং স্বাভাবিক রাস্তায় এটি প্রায় ৫৫ কিমি / লিটার মাইলেজ দেয়।

suzuki hayate

বাইকটির সামগ্রিক উচ্চতা ও ওজন খুবই ভালো ব্যালেন্স প্রদান করে। এটির ওজন ১১৪ কেজি এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬৫ মিমি। ফলে যে কোনও রাস্তায় স্বাচ্ছন্দ্যে চলার জন্য বাইকটি বেশ ভালো উপযোগী । এই বাইকটির সামনে এবং পেছনে উভয় দিকের টায়ারেই আছে ড্রাম ব্রেক। বাইকটির সামনের টায়ার ৭০/১০০- ১৭ মি / সি ৪০ পি সাইজের এবং পেছনের টায়ার ৮০/১০০- ১৭ মি / সি ৫৩ পি সাইজের। সুজুকি হায়াতে স্পেশাল এডিশন বাইকটি বর্তমানে সাদা, কালো, নীল এবং লাল এই চারটি আকর্ষণীয় রঙে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

Suzuki GSX 125

আপনি যদি সীমিত বাজেটে বাইক খুঁজে থাকেন তবে Suzuki GSX 125 হবে আপনার জন্য সেরা একটি বাইক। ভালো মাইলেজ, আকর্ষনীয় লুক্স, সব বয়সের জন্য এই বাইক বেশ জনপ্রিয়। বাইকটির একটি ফিচারস বেশ নজরে আসে তা হচ্ছে “এলইডি ফিচারস লাইট”। বিখ্যাত এই বাইকটি লুক্সের সাথে স্থায়িত্বের জন্যেও বেশ নজরে এসেছে।

Suzuki GSX 125

প্রথমেই আসি বাইকের ইঞ্জিনের বিষয়ে। বাইকটিতে যুক্ত করা হয়েছে ১২৫ সিসির পাওয়ারকুল ইঞ্জিন। আপনি যদি টর্কের ব্যাপারে প্রশ্ন করেন তবে জেনে রাখুন বাইকটি আপনাকে ৯.২ নিউটন মিটার @ ৭০০০ আরপিএম ম্যাক্স টর্ক সরবারহ করবে।

বাইক চালকদের জন্য আরেকটি জানার ব্যাপার হচ্ছে বডি স্ট্রাকচার নিয়ে। সুজুকির এই বাইকটিতে আছে বডি ডাইমেনশনে ১৯৯০×৭৫৫×১০৭৫ এর মতো ফিটনেস। এছাড়াও এতে সিলভার কোটিং করা আছে।

ব্রেক এবং সাসপেনশন নিয়ে কথা বললে বলত হয়, এটিতে রয়েছে দুই ধরনের ব্রেকিং সুবিধা। ABS (anti-locking system) এবং অন‍্যটা CBS সিস্টেম। বাইকের সহজ চলাচলে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কোপিক, কয়েল স্প্রিং এবং এর ফ্রন্ট হুয়েল। এছাড়াও রেয়ার সাইড হুয়েলে আছে হাইড্রোলিক স্প্রিং ড‍্যাম্পেনিং ডুয়েল শক সাসপেনশন। এতে বেশ উন্নতমানের ব্রেক টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। এই বাইকটির ফ্রন্ট ও ব্রক টায়ারের বেইস মূলত ২.৭৫/১৮ চওড়া এবং টিউবলেস।

৪। Zaara Digital V2

এই বাইকটি বাজারে সাম্প্রতি এসেছে। আপনার স্বল্প বাজেটের এবং লং লাস্টিং ব্যবহারের জন্য এই বেশ উপযুক্ত একটি বাইক। বিখ্যাত এই বাইকটি বেশ কয়েকটি নজর কারা বৈশিষ্ট্য আছে যেমনঃ পাওয়ারফুল ইঞ্জিন, গুড সিটিং পজিশন, ভালো লাইটিং সিস্টেম, স্টিল ডায়মন্ড ফ্রেম চেসিস ইত্যাদি। এছাড়াও এটির ফুয়েল ক্যাপাসিটিও বেশ ভালো। এটি থেকে আপনি প্রায় ৫০ কিমি/লিটার এভারেজ মাইলেজ এবং প্রায় ৯০ কিমি/আওয়ার টপ স্পিড পাবেন।

zaara digital v2

এই বাইকটিতে ১০৬.৬৭ সিসি ডিসপ্লেসমেন্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এটির ইঞ্জিন সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪ স্ট্রোক এবং এয়ারকুলড বিশিষ্ট। এছাড়াও ইঞ্জিনটি ২-ভালব এবং সিঙ্গেল ওভারহেড ক্যামস্যাফট বিশিষ্ট। এই বাইকটির সমগ্র ওজন প্রায় ১০৭ কেজি। ফুয়েল ট্যাংকের ধারণ ক্ষমতা ১২ লিটার। এই বাইটির সামনের দিকে রয়েছে সাধারণ হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পেছনের আছে সুইংআর্মের সাথে যুক্ত স্প্রিং লোডেড টুইন শক সাসপেনশন সিস্টেম।

এবার আসি টায়ার এবং হুইয়েলের ব্যাপার। এই বাইকে ৫-স্পোক অ্যালয় টাইপ হুইল এবং টিউবলেস টাইপ টায়ারের ব্যবহার দেখা যায়। এর সামনের চাকায় ২.৭৫-১৭ সেকশন টায়ার এবং পিছনের চাকায় ৩.০০-১৭ সেকশন টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে।

৫। Honda Dream 110

১১০ সিসির বাইকের মধ্যে হোন্ডা ড্রিম ১১০ দশ দাপটের সাথে বাজার দখল করে আছে। এই বাইকটি পেছনের সবার যেসব কারণ থাকে তাঁর মধ্যে অন্যতমঃ স্বল্প মূল্য, স্থায়িত্ব, বিশেষ ধরনের গতিবেগ। আপনি যদি মাইলেজের কথা বলেন তবে বলতে হবে এই বাইকটি প্রায় ৮৬কিমি/ঘন্টা এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ৬০কিমি/ লিটার মাইলেজ দেয়। এক নজরে বললে এই বাইকে আছে ১১০ সিসি পাওয়ারফুল ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিন ৪ স্ট্রোক বিশিষ্ট্য, আছে সিঙ্গেল সিলিন্ডারের সুবিধা, এবং এয়ার কুল্ড। এছাড়াও আছে ৭৫০০ আরপিএম -এ ৮.২৪৭ বিএইচপি ম্যাক্স পাওয়ার।

honda dream 110cc

বাইকের বডি নিয়ে কথা বললে বলা যায় এটি দৈর্ঘ্যের দিক থেকে ২০২০ মিমি,উচ্চতা ১০৬১ মিমি। হুইলবেস আছে ১২৮৫ মিমি এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৮০ এই বাইকটিতে আরামপ্রদভাবেই রাইড করা যায়। বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম নিয়ে জানা যাক, এর উভয় পাশেই আছে ১৩০ মিমি ড্রাম ব্রেক। টায়ারগুলো টিউবলেস। আর বাইকটির সামনে রয়েছে টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন সিস্টেম। এটির উভয় দিকের টায়ার সাইজ ৮০/১০০- ১৮।

শেষকথা

আপনি যদি সহজ দামে এবং আরামদায়ক বাইক বেছে নিতে চান তবে কমিউটার বাইকগুলো সেরা। এই বাইকগুলো শুধুমাত্র আরামই দেয় না, শহর কিংবা গ্রামে যেকোন রাস্তায় আপনাকে চলতে সাহায্য করবে পুরোদমে। তাই রিভিও দেখে ঘুরে আসুন পছন্দের সেরা বাইকটি খুঁজে নিতে।

শখের মোটরসাইকেলের সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতে পারেন বাইকগার্ড জিপিএস ট্র্যাকার। ফিচার হিসাবে পাচ্ছেন ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, লাইভ ট্র্যাকিং, জিও-ফেন্সিং, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন বাইকগার্ড প্যাকেজ সমূহ অথবা চাইলে আমাদের এক্সপার্ট টিমের সহযোগিতা পেতে নিচের ফরমটি জমা দিতে পারেন।

    মোটরসাইকেল সুরক্ষায় বাইকগার্ড সম্পর্কে জানতে




    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *