মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তনের নিয়ম – কাগজপত্র, নিরদেশিকা ও ফি

মোটরবাইক কেনাবেচার পর মালিকানা পরিবর্তন করা বাধ্যতামূলক, কিন্তু অনেকেই সঠিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন নন। ভুল বা অসম্পূর্ণ কাগজপত্রের কারণে পরে আইনি জটিলতায় পড়তে হতে পারে। এই ব্লগে আমরা মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তনের নিয়ম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও করণীয় সহজভাবে তুলে ধরব, যাতে আপনি ঝামেলামুক্তভাবে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারেন।

সূচীপত্র

মোটর বাইকের মালিকানা পরিবর্তনের ফর্ম সমূহ:

এছাড়াও যা যা লাগবে-

  • ১৫০ টাকা মূল্যের দুটি স্ট্যাম্প।
  • একটি ক্রেতার পক্ষে এবং অন্যটি বিক্রেতার পক্ষে।
  • স্ট্যাম্পের উপর গাড়ির সকল তথ্য ও ক্রেতা-বিক্রেতার বিস্তারিত তথ্য দিয়ে হলফনামা লিখতে হবে।
  • উভয় পক্ষের স্বাক্ষর থাকতে হবে এবং এটি নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সত্যায়িত করা উচিত।

মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ক্রেতা ও বিক্রেতার জন্য আলাদা হয়। ক্রেতা এবং বিক্রেতার প্রতিটি করণীয় সঠিকভাবে পালন করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে মালিকানা পরিবর্তন প্রক্রিয়া সহজ এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন হতে পারে। এখন চলুন, এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

ক্রেতার করণীয় কাজ

সাধারণ মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ক্রেতার করণীয় হলো— পূরণকৃত ও স্বাক্ষরিত ‘টিও’ ও ‘টিটিও’ ফরম জমা দেওয়া, প্রয়োজনীয় ফি পরিশোধের রশিদ দাখিল করা, নির্দিষ্ট যানবাহনের ক্ষেত্রে TIN সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি প্রদান করা, মূল রেজিস্ট্রেশন সনদ (উভয় কপি) বা ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (যদি প্রযোজ্য হয়) দাখিল করা, এবং ওয়ারিশসূত্রে মালিকানা প্রাপ্ত হলে ছবিসহ নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রদান করা।

এছাড়াও ক্রেতাকে নমুনা স্বাক্ষর ফরমে স্বাক্ষর, নাম, ঠিকানা, তিন কপি স্ট্যাম্প আকারের রঙিন ছবি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে। যদি ক্রেতা কোনো প্রতিষ্ঠান হয়, তাহলে উপরোক্ত কাগজপত্রের সঙ্গে অফিসিয়াল প্যাডে একটি চিঠি সংযুক্ত করতে হবে।

বিক্রেতার করণীয় কাজ

বিক্রেতার করণীয়ের মধ্যে রয়েছে— ‘টিটিও’ ফরম ও বিক্রয় রশিদে স্বাক্ষর প্রদান, ছবিসহ বিক্রয় হলফনামা জমা দেওয়া, এবং যদি বিক্রেতা কোনো কোম্পানি হয়, তাহলে কোম্পানির লেটার হেড প্যাডে ইন্টিমেশন, বোর্ড রেজোলিউশন ও অথরাইজেশন পত্র প্রদান করা। এছাড়াও, যদি মোটরযানটি কোনো ব্যাংক বা অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়বদ্ধ থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত ছাড়পত্র সংগ্রহ করে তা দাখিল করতে হবে।

ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা পরিবর্তন

ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা পরিবর্তন ক্ষেত্রে ক্রেতাকে পূরণকৃত ও স্বাক্ষরিত ‘টিও’ ও ‘টিটিও’ ফরম, কোর্ট বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ওয়ারিশ সনদ, প্রয়োজনীয় ফি জমাদানের রশিদ, প্রথম ওয়ারিশের TIN সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি (যদি প্রযোজ্য হয়), মূল রেজিস্ট্রেশন সনদ বা ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, এবং ওয়ারিশসূত্রে মালিকানা প্রাপ্তির হলফনামা দাখিল করতে হবে।

একাধিক ওয়ারিশ থাকলে এবং মালিকানা একক ব্যক্তির নামে প্রদান করা হলে অন্যান্য ওয়ারিশদের দ্বারা স্বাক্ষরিত হলফনামা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি, নমুনা স্বাক্ষর ফরমে স্বাক্ষর, ইংরেজিতে নাম, পিতার/স্বামীর নাম, ঠিকানা ও তিন কপি স্ট্যাম্প আকারের রঙিন ছবি সংযুক্ত করতে হবে।

মোটরসাইকেল মালিকানা পরিবর্তনের নির্ধারিত ফি সমূহঃ

মোটরসাইকেল মালিকানা পরিবর্তনের জন্য নির্ধারিত ফি সমূহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে। এই ফি গুলি সাধারণত রেজিস্ট্রেশন, সনদ প্রদান, এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি ফরম পূরণের জন্য জমা দিতে হয়। ফি পরিশোধের পরই মালিকানা পরিবর্তন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব। সঠিক ফি পরিশোধ নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে কোনও ধরনের সমস্যা সৃষ্টি না হয় এবং প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়। আপনি যদি নতুন মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে চান তবে ঘুরে আসতে পারেন আমাদের এই ব্লগটিতে। নিম্নে মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তনের নির্ধারিত ফি সমূহ দেওয়া হলো-

০ হইতে ১০০ সি সি র জন্য ব্যাংক জমা (নাম্বার প্লেট সহ)

  • মালিকানা ফি ২,১২৮ টাকা।
  • ডিজিটাল নাম্বার প্লেট ২,২৬০ টাকা
  • ডিজিটাল ব্লু বুক ৫৫৫ টাকা
  • প্রতিলিপি ফি ৩৪৫ টাকা
  • সর্ব মোট ৫,২২৮ টাকা।

০ থেকে ১০০ সিসি র জন্য ব্যাংক জমা (নাম্বার প্লেট ছাড়া)

  • মালিকানা ফি ২,১২৮ টাকা,
  • ডিজিটাল ব্লু বুক ৫৫৫ টাকা,
  • প্রতিলিপি ফি ৩৪৫ টাকা,
  • সর্ব মোট ৩,০২৮ টাকা।

১০০ হইতে ১৫০ সি সি র জন্য ব্যাংক জমা (নাম্বার প্লেট সহ)

  • মালিকানা ফি ২,৬৬৫ টাকা
  • ডিজিটাল নাম্বার প্লেট ২,২৬০ টাকা,
  • ডিজিটাল ব্লু বুক ৫৫৫ টাকা,
  • প্রতিলিপি ফি ৩৪৫ টাকা,
  • সর্ব মোট ৫,৮২৫ টাকা।

১০০ থেকে ১৫০ সি সি র জন্য ব্যাংক জমা (নাম্বার প্লেট ছাড়া)

  • মালিকানা ফি ২,৬৬৫ টাকা,
  • ডিজিটাল ব্লু বুক ৫৫৫ টাকা,
  • প্রতিলিপি ফি ৩৪৫ টাকা,
  • সর্ব মোট ৩,৫৬৫ টাকা।

শেষকথা

মোটরবাইক মালিকানা পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা আপনার আইনগত অধিকার এবং সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। এই প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ফি এবং নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব ধরনের ফরম পূর্ণ করা, ব্যাংক জমা পরিশোধ করা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি দাখিল করা না হলে মালিকানা পরিবর্তন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই, সঠিক সময়ে এবং নিয়ম অনুসরণ করে মালিকানা পরিবর্তন করুন এবং বাইক নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকুন।

শখের মোটরসাইকেলের সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতে পারেন বাইকগার্ড জিপিএস ট্র্যাকার। ফিচার হিসাবে পাচ্ছেন ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, লাইভ ট্র্যাকিং, জিও-ফেন্সিং, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন বাইকগার্ড প্যাকেজ সমূহ অথবা চাইলে আমাদের এক্সপার্ট টিমের সহযোগিতা পেতে নিচের ফরমটি জমা দিতে পারেন।

    মোটরসাইকেল সুরক্ষায় বাইকগার্ড সম্পর্কে জানতে




    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *